বৃত্তবন্দী - বাংলা থ্রিলার সাহিত্যে অন্যতম সংযোজন?
বৃত্তবন্দীর গল্পের শুরুতে লেখক আমাদের পরিচয় করিয়ে দেন পিবিআই ইনস্পেক্টর মুহিত এবং সদ্য একাডেমি গ্র্যাজুয়েট করে ক্যারিয়ার শুরু করা এসআই ইরানের সঙ্গে। গল্পের খাতিরেই আমরা পরিচিত হই, ক্রিমিনাল সাইকোলজিস্ট ড. জামিউল পাশার সাথে। বেশ মিস্ট্রিয়াস একটি ক্যারেক্টার। চমৎকার সব ব্যাখার সাথে জেনেছি নতুন অনেক তথ্য।
লেখক গল্প বলেছেন তিনটি খন্ডে। প্রথম খন্ড শুরু হয় গতানুগতিক থ্রিলারের মতো একটি বি ভ ৎ স খু ন দিয়ে। এবং প্রথম খন্ডে সে অপরাধীর পরিচয়ও বের হয়ে পড়ে। তারপর শুরু হয় আসল খেলা। ৬ মাসের ব্যবধানে একইরকম ভাবে দু’টো খু ন! আবারও শুরু হয় তদন্ত। গল্প নিজ গতিতে এগোতে থাকে, নতুন অনেক ব্যপার সামনে আসতে থাকে। মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপারগুলো নিয়ে বেশ চমৎকারভাবে খেলেছেন লেখক। যা ছিলো বেশ উপভোগ্য। এবং একসময় আমরা বই পড়ে শেষ করে ফেলি। স্বাভাবিকভাবেই, সব কিছু পরিষ্কার হয়ে উঠে।
শেষ দুই খন্ড বেশ উপভোগ করেছি। লেখকের গল্প বলার ভঙ্গিমা, লেখনশৈলী চমৎকার। গল্পের শেষটা জানার জন্য একনাগাড়ে পড়ে গেছি। পাঠকদের ভাষায় যাকে বলে, পেজটার্নার। দারুণ এক থ্রিলিং আবহ সৃষ্টি করতে সফল হয়েছেন লেখক। নতুন নতুন অনেক ইন্টারেস্টিং টার্ম সম্মন্ধে জেনেছি। টার্মের ব্যাখ্যা/কনটেক্সটগুলোও ছিল বেশ ইন্টারেস্টিং।
এমন না যে, পুরো গল্প জুড়ে খুব আহামরি টুইস্ট ছিলো, তাও বইটি শেষ করে মনে হয়েছে - ওর্থ ইট। অনেকদিন পর বেশ চমৎকার একটি হার্ডকোর সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারের স্বাদ নিলাম। সকল এলিমেন্টস ছিলো ঠিকঠাক। সবমিলিয়ে ‘বৃত্তবন্দী’ অবশ্যই বাংলা মৌলিক থ্রিলার সাহিত্যের জগতে অন্যতম একটি সংযোজন। নির্দ্বিধায় সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারের ক্ষেত্রে বৃত্তবন্দী একটি সার্থক উপন্যাস। এবছর এখন পর্যন্ত পড়া সেরা বাংলা থ্রিলার - বৃত্তবন্দী।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন